Header Ads Widget

Responsive Advertisement

নাসিরুদ্দিন হোজ্জার গল্প


কারণ, আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন

নাসিরুদ্দিন হোজ্জার জন্ম তুরস্কে ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে। নানা চরিত্রে ও পেশায় তাঁকে তাঁর কয়েক শ গল্পে হাজির হতে দেখা যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, হোজ্জা এখন আর তুরস্কের নন, সারা বিশ্বের। ইউনেসকো তাঁর গল্পগুলোকে বিশ্বসাহিত্যিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। হোজ্জা অবশ্য একেক অঞ্চলে একেক নামে অভিহিত। যেমন উজবেকিস্তান ও চীনে তিনি আফেন্দি বা এফেন্দি। তাঁর গল্প কখনো নির্মল হাস্যকৌতুকে, কখনো বুদ্ধির ঝলকে, কখনো বা নৈতিক শিক্ষার দ্যুতিতে উজ্জ্বল। কখনো নিজেকে নিজেই ব্যঙ্গ করেছেন।



তাতে তোমার কী

হোজ্জা একদিন বাজার থেকে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে হোজ্জার সঙ্গে তাঁর পড়শির দেখা হলো। পড়শি হোজ্জাকে বলল, ‘হোজ্জা, জমিদারের পেয়াদাকে দেখলাম, বিরাট এক পাত্রভর্তি হালুয়া নিয়ে এ পথ দিয়ে গেল।’

হোজ্জা জবাবে বললেন, ‘তাতে আমার কী?’
পড়শি বলল, ‘না মানে, পেয়াদাকে দেখলাম তোমার দরজার দিকেই গেল।’

হোজ্জা আরও গম্ভীরভাবে জবাব দিলেন, ‘তাতে তোমার কী?’

কত দূর সরতে হবে

রাতে হোজ্জা বিবির সাথে খাটে শোয়া ছিলেন। বিবি হাত-পা ছড়িয়ে আরামের সঙ্গে শোয়ার জন্য হোজ্জাকে একটু দূরে যেতে বললেন। হোজ্জা খাট থেকে নেমে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে সোজা হাঁটা ধরলেন।

পথে এক পড়শির সঙ্গে দেখা হলে পড়শি জিজ্ঞেস করল, ‘কী ব্যাপার হোজ্জা, এত রাতে কোথায় চললে।’

হোজ্জা জবাব দিলেন, ‘তা আমি কী করে জানব। তুমি বরং আমার বিবি থেকে এ প্রশ্নের উত্তর জেনে আসো, আর আমাকে জানাও যে আমাকে আর কত দূর সরতে হবে।’

কারণ, আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন

অবসর সময়ে হোজ্জা গ্রামে হেকিমি চিকিৎসাচর্চা করতেন। একদিন এক কিপটে বুড়ো হোজ্জার কাছে এসে বলল, ‘আমি উঠলে বসতে পারি না আর বসলে উঠে দাঁড়াতে পারি না।’

‘কারণ, আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন,’ হোজ্জা বললেন।

‘আমার সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মাঝেসাঝে খিঁচুনি ধরে।’

‘কারণ, আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন,’ হোজ্জা বললেন।

‘কোনো খাবার খেলেই আমার বদহজম হয়।’

‘এরও কারণ হলো আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন,’ হোজ্জা জবাব দিলেন।

বুড়ো রেগে আগুন হয়ে বলল, ‘হোজ্জা, তুমি কেমন হেকিম হে? একই উত্তর বারবার বলে যাচ্ছ?’

‘আপনি যে এত রেগে গেছেন, তারও কারণ হলো আপনি বুড়ো হয়ে গেছেন,’ হোজ্জা শান্তভাবে জবাব দিলেন।

Post a Comment

0 Comments